পরিবর্তনের কথা বলে

Music

test

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Friday, February 7, 2020

খুতবা প্রচলনের ইতিবৃত্ত

ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত
খুতবা’র শাব্দিক অর্থ বক্তৃতা করা বা ভাষণ দেওয়া। শরিয়তের পরিভাষায় খুতবা বলা হয় এমন বক্তৃতা যাতে আল্লাহর প্রশংসা, তার একত্ববাদের ঘোষণা, রাসুল (সা.) প্রতি দরুদপাঠ এবং উপস্থিত সাধারণের প্রতি উপদেশকথন রয়েছে।
মহানবি (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর কুবার মসজিদে প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেন। এতে রাসুল (সা.) নিজেই ইমামতি করেন। এদিন জুমার নামাজের আগে তিনি দুইটি খুতবা দেন। আর তখন থেকেই শুক্রবারে জুমার নামাজের জামাতের আগে দুইটি খুতবা দেওয়ার বিধান প্রচলিত হয়।
রাসুল (সা.)-এর খাদেম ও প্রখ্যাত সাহাবি আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) যখন আমাদের এখানে (মদিনা) আসেন, তখন আনসারদের প্রতিটি ঘরে কবিতাচর্চা হতো। তখন দাওয়াতি কাজের জন্য, ব্যক্তির শৌর্য-বীর্য ও চেতনাবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য, বিভিন্ন দল ও মতের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এবং শত্রুকে আতঙ্ক দেখিয়ে বিতাড়নের জন্য খুতবার বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সাহিত্যের মর্যাদা আরও বেড়ে যায়।’ (আল-বায়ান ওয়াত তাবয়িন, ২/৯৮; জুরজি জায়দান, তারিখু আদাবিল লুগাহ্ আল-আরাবিয়্যাহ, ১/১৮৭)
ইসলামি সভ্যতার সোনালি যুগে সাহিত্য শুধু উৎকর্ষই হয়নি, বরং তা নতুন গতিপথও পেয়েছে। ইসলাম সাহিত্যের গুরুত্ব বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিষয়বস্তু ও রীতি পদ্ধতিতেও নতুনত্ব এনেছে। ওয়াজ-নসিহত, দিক-নির্দেশনা, উপদেশমূলক সাপ্তাহিক ও বাৎসরিক জুমা, ঈদ ও হজের খুতবা ছাড়াও তখন অন্য যে সব খুতবা আত্মপ্রকাশ করে তার মধ্যে- যুদ্ধ-সংগ্রামের খুতবা, পারস্পরিক বিতর্কের খুতবা, বিজয়ের খুতবা এবং শোকজ্ঞাপক খুতবা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
রাজনৈতিক খুতবা, প্রতিনিধি মিশনের খুতবা ছাড়াও আরও এক প্রকার অতি গুরুত্বপূর্ণ খুতবার আত্মপ্রকাশ ঘটে সে যুগে; যেটিকে খিলাফতের খুতবা নামে অভিহিত করা হয়। এটি হলো- খলিফা নির্বাচনের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া- যেটি তার প্রথম নীতিনির্ধারণী ভাষণ। যেকোনো প্রাদেশিক শাসনকর্তার ভাষণও এর অন্তর্ভুক্ত।
খ্যাতিমান সাহাবি খতিবদের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছেন আলি ইবন আবি তালিব (রা.)। এরপর আবু কবর, উমর (রা.) ও উসমান (রা.) ও অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম। প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা ও সাহিত্যিক আবুল হাসান আল-মাদাইনি বলেন, ‘আবু বকর (রা.) খতিব ছিলেন, উমর (রা.) খতিব ছিলেন এবং উসমান (রা.)-ও খতিব ছিলেন, তবে আলি ছিলেন তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ খতিব।’ (আল-বায়ান ওয়াত তাবয়িন, ১/৩৫৩)
পুরুষ খতিবদের পাশাপাশি অনেক মহিলা খতিবের নামও পাওয়া যায়। যারা বিভিন্ন উপলক্ষে বক্তব্য ও ভাষণ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.), উম্মুল খায়র আল-বারকিয়্যা (রা.), আজ-জারকা বিনতে হাদি (রা.), ইকরাশা বিনতে আল-আতরাশ (রা.)-সহ আরও অনেকে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

Post Top Ad

Your Ad Spot